Dawn Samad
Monday, August 3, 2020
হাবা গোবা
এতোটাই কি অসহায়???
স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি নিয়ে দেশে হৈচৈ চলছে, সকলের মত আমিও গা ভাসিয়ে দিয়েছিলাম ঐ গড্ডালিকাপ্রবাহে। কিন্ত আমার নিজস্ব একান্ত ব্যক্তিগত এক সমস্যার কারণে অন্যান্য খাতেও যা চলছে সেটার কিছু অংশ দৃষ্টিসীমায় চলে আসলো। ব্যক্তিগত সমস্যা সবার সাথে একটু ভাগ করে নিজের মনের বোঝা কিছুটা লাঘবের চেষ্টায় ভাবলাম দু'য়েকটা কথা বলেই ফেলি।
আগেই একবার বলেছি, শিক্ষা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার এবং রাষ্ট্রের দায়ীত্বের মাঝে পরে। আমাদের মত গরীব দেশ শুধু নয়, বিশ্বের প্রায় সকল গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পক্ষে শিক্ষাকে সার্বজনীন করে তোলা সম্ভব হ'য়ে ওঠেনা বলেই এই খাতে শক্তিশালী প্রাইভেট সেক্টর গড়ে উঠেছে। তবে বাংলাদেশের মত বিশ্বের আর কোন দেশে অন্তত স্কুল লেভেলে প্রাইভেট শিক্ষা কার্যক্রমকে এভাবে বানিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমার দেশে এসে, বিশেষ করে, বেশীর ভাগ প্রাইভেট স্কুল গুলোর যথেচ্ছাচার এবং অতি-বানিজ্যিকীকরণের যেন কোন জবাবদিহিতা নেই। কোন নাম উল্লেখ না ক'রে আমি শুধু একটি প্রাইভেট স্কুলের উদাহরণ টেনে আনছি এখানে, অন্যান্যদের কি অবস্থা আমার জানা নেই। আমি যা বলছি তার অনেক কিছুই মিডিয়াতে প্রমান সহ এসেছে, তারপরও মনে হয় না তাদের কোন বোধদয় হয়েছে কিংবা দেশে এদের যথেচ্ছাচারের ওপর খবরদারী করার মত কেউ আছে। সত্যিই যদি কেউ না থেকে থাকে তবে সেটাও সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা উচিৎ, তাহলে অন্তত আমি ব্যক্তিগত অসহায়ত্ববোধ থেকে মুক্তি পাবো।
দেশে মহামারী চলছে, বিগত প্রায় পাঁচ মাস কোন স্কুলে কোন ক্লাস চলছে না। এর মাঝে উক্ত স্কুলটি তাদের স্টাফ ছাটাই করেছে। এই প্রায় পাঁচ মাস সময়ে লোক দেখানো ফ্রি জুম এপ্লিকেশন ব্যবহার করে নামে মাত্র অনলাইন ক্লাস করিয়েছে সর্বোচ্চ দিন দশেক। কিন্ত তারা রি-এডমিশন ফি'য়ের নামে বিগত বছরের চাইতে এবছরে প্রায় দ্বিগুন ফি দাবী করেছে। প্রতি বছর তারা ১০% হারে টিউওশন ফি বাড়িয়ে থাকে, যদিও বর্তমানে তাদের টিউশন ফি দেশের বহু প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির চেয়ে বেশী। দেশের বর্তমান দুর্যোগকালীন সময়েও সেটার কোন ব্যতিক্রম চোখে পরছে না। অথচ, যতটুকু মনে পরে, বিগত ২০১৮-১৯ সালে তাদের নিজেদের অডিট রিপোর্টে নীট মুনাফা ৩২কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
তাদের লাভের অংক দেখে আমি পরশ্রীকাতরতায় ভুগছি বিষয়টি এতো সরলীকরণ করলে দু:খ পাবো। তারা শিক্ষাকে বানিজ্যিকীকরণ করে বিশাল মুনাফা করছে এবং আমরা নিরুপায় ভাবে তাদের সহযোগীতা করছি, কিন্ত এই স্কুলের মালিক স্বপরিবারে বিদেশের মাটিতে বসবাস করেন এবং বছরের নয় মাস বিদেশেই থাকেন। তিনি সেখানে বসে মানি লন্ডারিং করছেন কিনা সেটাও আমার দেখবার বিষয় না কিন্ত রাষ্ট্রের কারও না কারও তো বিষয় গুলোর লাগাম টেনে ধরবার অথবা অন্তত তদারকি করবার কথা। সেই দায়ীত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানটি কোনটা সেটাও আমি বুঝতে পারছি না বিধায় আমাকে অসহায়ত্ববোধ ঘিরে ধরছে।
এই বিষয়ে আমার বেশী কিছু বলাটা অভদ্রতার পর্যায়ে পরতে পারে ধরে নিয়ে যাদের জানার আগ্রহ আছে তারা কষ্ট করে পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টটি স্ক্রীনশট সংযুক্ত করলা পড়ে নেবেন। দূর্নীতির যে সার্বজনীন অবস্থা দেখছি সেটাতে মনে হয় না খুব সহসাই এটাকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা যাবে, কিন্ত একটা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে যদি আমরা এগিয়ে না যাই তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তো দেশের ছাল-বাকলও খুঁজে পাবে না, দূর্নীতিবাজে সব উপড়ে নিয়ে যাবে।
ল“ছাগু" গ“ছাগু" ও "সরল" অংক
বিদ্যালয় জীবনে প্রথম যখন লসাগু-গসাগু বুঝিবার চেষ্টা করিলাম, সেই সময় মনের ওপর কেমন যেন একটি বিষাদ আসিয়া ভর করিয়াছিল। আর সরল অংক তো সবসময়ই বাঁকা, ব্যাটার উত্তর একেকবার একেক রকম হইবেই। তখন হইতে "সরল" শব্দটির প্রকৃত অর্থই আমার নিকট উল্টাইয়া গিয়াছে এবং শব্দটি কোথায়ও দেখিলেই মনের মাঝারে এক ধরনের আকুলিবিকুলি অনুভূতির উদ্ভব হয়; মনে হয়, কোথাও না কোথায়ও প্যাঁচ আছেই। আমার মতই বাংলার মানুষের মনও এই সরল অংকের ধাক্কায় মনে হইতেছে বাঁকা হইয়া গিয়াছে এবং কতটা যে বাঁকিয়া গিয়াছে তাহা একটি খবর না পড়িলে কিছুতেই বুঝিতে পারা যাইবেনা। বেশী কথা না বাড়াইয়া খবরটির স্ক্রিনশট সংযুক্ত করিয়া দিলাম।
সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য "সরল বিশ্বাস" নামে একটি প্রায় অনুচ্চারিত ইন্ডিমনিটি ধারা বিভিন যায়গায় স্বীকৃত। ঊপরে উল্লেখিত খবরটিতে "জেকেজি" এবং "রিজেন্ট" যজ্ঞে সেই ধারাটি স্বাস্থ্য অধিদফতরের তিনজন কর্মকর্তা প্রয়োগ করিয়া, আমার মত সরল অংকের চাপে পরিয়া বাঁকাইয়া যাওয়া মনের অধিকারীদের বুঝাইয়া দিলেন, তাহাদের কোন দোষ নাই, অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা "সরল বিশ্বাস" লইয়া তাহাদের অনুমতি দিয়া এখন বেকায়দায় পরিয়াছেন, প্রতারিত হইয়াছেন। আবশ্য যেই দুইটি কথা তাহারা তাহাদের বক্তব্যে উহ্য রাখিয়াছেন বলিয়া প্রতীয়মাণ হইতেছে, তাহা আর কিছুই নহে,
২) তাহাদের "সরল বিশ্বাস"কে বাঁকা মনের বাংলার মানুষ তির্যক দৃষ্টিতে দেখিতেছে বলিয়া (হয়তো) তাহাদের মনে হইয়াছে, যেই কারণে আইনের প্রায় অনুচ্চারিত একটি ধারার প্রকাশ্য অবতারনা করিতে হইলো।
খবরটির সহিত সংযুক্ত ছবিটি দেখিয়া, যাহারা ছবি লইয়া গবেষণা করিয়া থাকেন তাহাদের বহুল ব্যবহৃত একটি বচন মনে পরিয়া গেল। তাহারা বলিয়া থাকেন, কথার চাহিতেও ছবি নাকি অনেক বেশী শক্তিশালী। আমি আবার অতশত বুঝি না। "সরল বিশ্বাস" নাকি অন্য কিছু ছিল এইখানে, তাহা হয়তো আর খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না, মাঝখানে কোরবানি হইলো দেশের মানুষ, ভুলন্ঠিত হইল দেশের ভাবমূর্তি, সরকারি টাকার অপচয় তো আছেই, শেষ পর্যন্ত দায় আসিয়া পরিবে হয়তো রাজনীতির ঘাড়ে; বাকি সবই "সরল বিশ্বাস"।
শেক্সপিয়ারের এক অমর বাণীর কথা মনে পরিয়া গেল,
"Hell is empty. All the devils are here".
এই প্রজন্মের সন্তানেরা তো আবার ডুগডুগি চিনিবে না। তাহা না হইলে বর্তমান প্রজন্মকে এক্ষণে ডুগডুগি বানাইবার জন্য উৎসাহ দিতাম। ডুগডুগির ক্রেতা খুঁজিয়া না পাইলেও অন্তত নিজেরা বাজাইয়া মনের ঝাল মিটাইতে তো পারিতাম।
বিঃদ্রঃ- ডুগডুগি কি তাহা বুঝাইয়া বলাটা বিশেষ প্রয়োজনীয় বলিয়া মনে হইলো। ইহা কাঠের খোলের উপর ছাগলের চামড়া দিয়া মোড়াইয়া নির্মিত এক ধরনের ছোট্ট বাদ্যযন্ত্র।
তবে আলোচ্য বিষয়ের মাঝে ছাগল শব্দটি না থাকিবার কারণে আমার শব্দচয়ন আমারই বুঝিতে অসুবিধা হইতেছে। এইখানে ছাগল বলিতে কাহাকে বুঝানো যাইতে পারে? সরল বিশ্বাসের মানুষেরা? বহু ভাবিয়া অবশেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইলাম যে, ছাগল যাহাকেই বুঝাইয়া থাকি না কেন, বাংলার মানুষকে যদি কেহ ছাগল ভাবিয়া থাকে তাহা হইলে তাহাদেরকে আরেকবার বিদ্যালয়ে পাঠাইয়া লছাগু ও গছাগু অধ্যয়নে মননিবেশ করিবার সুযোগ করিয়া দেওয়া আমাদের বিশেষ কর্তব্য।
হাবা গোবা
বাবা্র মৃত্যু শয্যায় প্রায় সপ্তাহ দশেক হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে আমি সার্বক্ষণিক ভাবে বাবার পাশে থাকার চেষ্টা করতাম। সেই সময় বাবাকে দেখতে আসল...
-
বাবা্র মৃত্যু শয্যায় প্রায় সপ্তাহ দশেক হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে আমি সার্বক্ষণিক ভাবে বাবার পাশে থাকার চেষ্টা করতাম। সেই সময় বাবাকে দেখতে আসল...
-
স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি নিয়ে দেশে হৈচৈ চলছে, সকলের মত আমিও গা ভাসিয়ে দিয়েছিলাম ঐ গড্ডালিকাপ্রবাহে। কিন্ত আমার নিজস্ব একান্ত ব্যক্তিগত এক সমস...
-
বিদ্যালয় জীবনে প্রথম যখন লসাগু-গসাগু বুঝিবার চেষ্টা করিলাম, সেই সময় মনের ওপর কেমন যেন একটি বিষাদ আসিয়া ভর করিয়াছিল। আর সরল অংক তো সবসময়ই বাঁ...