বাবা্র মৃত্যু শয্যায় প্রায় সপ্তাহ দশেক হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে আমি সার্বক্ষণিক ভাবে বাবার পাশে থাকার চেষ্টা করতাম। সেই সময় বাবাকে দেখতে আসলেন এক ভদ্রলোক। বাবা খুব উচ্ছসিত ভাবে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললেন, ওর সাথে যোগাযোগ রেখো, আমার সিলেটের লোক, একদিন বিশাল সাংবাদিক হবে। বিভিন্ন কারণে তাঁর সাথে তেমন যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
বাবার এই এক সমস্যা ছিল। জেলা গুলো তৈরী হবার এতোদিন পরেও সিলেট বিভাগের সব জেলার মানুষকেই তিনি আমার সিলেটের লোক বলতেন। সাংবাদিক ভদ্রলোকও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। পরবর্তিতে জেনেছিলাম, তিনি সুনামগঞ্জ জেলার মানুষ। সেই সাংবাদিক এখন সত্যিই সাংবাদিকতায় প্রথম কাতারের একটি নাম। তাঁর একটি লেখা আজকের এক পত্রিকায় পড়ে খুব ভাল লাগলো। বাংলাদেশের অভিনয় জগতের এক নক্ষত্র কমেডিয়ান, "হাবা হাসমত" কে নিয়ে সমসাময়িক একটি লেখা।
পড়ার পর মনে হল, ওনার কথায় আমি একমত নই। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী, মানবতা বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত "রাজাকার", "আলবদর", "আলশামস", শান্তিকমিটি" নামধারী চুড়ান্ত খলনায়ক গুলোকে মুক্তিযুদ্ধের পর মুক্তিযুদ্ধের ওপর রাচিত প্রায় সকল বাংলা সাহিত্যে কমেডিয়ান হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমার মনে হয়ছে, এই সাহিত্যকর্ম গুলো আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই সমস্ত ভয়ংকর চরিত্র গুলো সম্পর্কে ভুল বার্তা বয়ে নিয়ে যাবে। ঐ চরিত্র গুলো বাস্তবে কোন মতেই কমেডিয়ান চরিত্র ছিল না। দানব সাদৃশ্য ইয়াহিয়া খানের কার্টুনটির সাথে ইয়াহিয়ার এদেশীয় দোসর গুলোর চেহারাও একই রকমের ভয়ংকর ছিল।
আজকের উক্ত লেখার সমসাময়িক প্রেক্ষাপটের সাথে দেশের একজন প্রথিতযশা কমেডিয়ানের তুলনা করে যদিও তিনি বর্তমানের মূল খলনায়ককে ("দের" শব্দটি ইচ্ছাকৃত ভাবে লেখলাম না, কারণ, উনি একজকে নিয়েই মূলত লিখেছেন, যদিও এখানেও আমার দ্বিমত রয়েছে) চিত্রিত করেছেন একজন বিশেষ "হারামজাদা" হিসেবে, তারপরও বলবো, এতে আমার দেশের একজন বিখ্যাত অভিনয় শিল্পীকে খাটো করা হয়েছে। আমার জানা মতে বর্তমানের এই খলনায়কের তিন গুষ্ঠি অন্তত দেশ বিরোধী, মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত অথবা জড়িত ছিলেন, এদের কমেডিয়ান ভাববার কোন অবকাশ নেই, এদের কথা শুনলেও আজকাল অন্তত আমার তাদেরকে ফাঁসিতে লটকাতে ইচ্ছে করে।
বর্তমানে কমেডিয়ান হিসেবে যদি কাউকে চিত্রিত করতেই হয় তবে বিরোধী দলীয় দু'য়েকজন নেতার প্রসঙ্গে করা ভাল। ওহ, সমস্যা তো এখানেও আছে। দেশে বর্তমানে বিরোধী দল তো দুটো, একটি সত্যিকারের বিরোধী দল, আরেকটি তথাকথিত বিরোধী দল। যাইহোক, তথাকথিত বিরোধী দলের এক নেতা প্রায় প্রতিদিনই হাসির খোড়াক জাগানিয়া কথা বলেন। আজকের পত্রিকায় দেখলাম, গতকালও তিনি সেরকম একটা কথাই বলেছেন। এই ভদ্রলোক যেমন মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা বুঝতে চান না, ঠিক তেমনি দেশের চলমান মহামারী এবং ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কথাও বুঝতে চান না।
অবশ্য দেশ ও জাতির দুঃসময়ে দেশবাসীকে কিছুটা কমেডি রিলিফ দেবার জন্য সকল দলেই এরকম কিছু প্রথিতযশা হাবা হাসমতের সাথে তুলনীয় কমেডিয়ান আছেন।
This comment has been removed by the author.
ReplyDeleteasdassdafsadfasdfasdf
ReplyDelete